Posts

Showing posts from November, 2017

আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমানঃ সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই? -আইনুল বারী

আমি মানুষ বনাম আমি মুসলমানঃ   সবার উপরে মানুষ সত্য , তাহার উপরে নাই ? - আইনুল বা রী -----   -------------        ----------- যারা মানবতাবাদী ও নাস্তিক , তারা যুক্তি দিয়ে নিজেদের পরিচয় দিতে চান , আমরা মানুষ।আমরা হিন্দু না , খৃস্টান না , মুসলমান না , আমরা মানুষ। সবার উপরে মানুষ সত্য , তাহার উপরে নাই। অন্যদিকে , ধর্মীয় পরিচয়ে এমন উদারতা নেই , তার বদলে আছে সাম্প্রদায়িকতা , বিভেদের সংকীর্ণতা। যখন কেউ বলে , আমি মুসলমান , আমি খৃস্টান , আমি বৌদ্ধ , আমি শিখ , আমি জৈন , তখন তাকে অন্য সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে বাদ দিয়ে চিন্তা করতে হয় । ' মানুষ ' বললে এর ভেতরে সবাই চলে আসে , জটিলতা থাকে না। অসহায় একজন মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ভাবতে হয় না মানুষটি ইহুদী , নাকি খৃস্টান , নাকি মুসলমা্‌ন নাকি নাস্তিক। সে একজন মানুষ , এ পরিচয়ই যথেষ্ট। মানুষ পরিচয়ের মাঝে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা-বিদ্বেষ , দ্বিধা-দ্বন্দ্ব , এসব থাকে না। একেই বলে মানবতা। প্রকৃত মানবতা ধর্মীয় পরিচয়ে মানুষকে বড় করে তোলে না , বরং মনুষ্যত্বের পরিচয়ে বড় করে তোলে। যুক্তি প্রখর , মানবতার সংজ্ঞা পরিষ্কার। এটিই

মানব-উন্নয়নে আত্ম-সন্মানের বাজেট: বিকল্প ভাবনা -আইনুল বারী

মানব-উন্নয়নে  আত্ম-সন্মানের বাজেট: বিকল্প ভাবনা -আইনুল বারী  ------------- একজন মানুষের কাছে হারানোর মতো একান্ত ব্যক্তিগত বড় সম্পদ কী আছে? উত্তর সহজ, 'আত্ম-সন্মান' বা 'আত্ম-মর্যাদা'। কিন্তু এটি সংকীর্ণ স্বার্থবাদ বা সেলিব্রেটি আত্ম-কেন্দ্রিকতা নয়, যা প্রচলিত পুঁজিবাদী জীবন-দর্শন সচারচর শেখায়। যখন মানুষের এই অমূল্য সম্পদ হারিয়ে যায়, বা কমতে থাকে কেবল তখনই সে নিঃস্ব হতে শুরু করে। এটিই মানুষের প্রকৃত দারিদ্র্য। আমরা যখন অর্থনীতির বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট পরিকল্পনা করি, তখন যদি আত্ম-সন্মানের অর্থনীতি রচনা করতে না পারি তবে অর্থনীতির সূচক অনেক বৃদ্ধি পেলেও তা প্রকৃত উন্নয়ন হবে না। অর্থনীতির সূচকের উঠা-নামার পরিসংখ্যান এক অর্থে প্রবঞ্চনা, যদি তার বন্টনে ত্রুটি থাকে, আর তা ন্যায়বিচার পরিপন্থী হয়। জাতীয় অর্থনীতির সুস্থতা সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কযুক্ত। (২) সে অর্থনৈতিক বৃহৎ প্রবৃদ্ধিতে কী যায় আসে যা্র ফল বেশির ভাগ মানুষ ভোগ করতে পারে না। ট্রিকেল ডাউন (চুঁয়ে পড়া) পদ্ধতিতে প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের ধারণা শোষণমূলক ও নির্যাতনমূলক মনে করা কি খুব অন্যায় ? মঙ্গল গ্রহে

শুভ অশুভের লড়াই, বাংলাদেশ -আইনুল বারী

শুভ অশুভের লড়াই ,  বাংলাদেশ (পুরোনো লেখা) -আইনুল বারী --           ------             ---- আমরা  শুভ-র পক্ষে কাজ করতে গিয়ে ভীষণ ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাই, কেননা অশুভ আমাদের চোখ রাঙায় । চোখের সামনে শত অন্যায়  কাজ  হয়ে যেতে দেখলেও চুপ করে থাকি, যেনো তা নির্বিঘ্নে ঘটে যাক, কেননা অশুভ আছে  তাদের  পাহাড়ায় । আমাদের তথাকথিত ভালো মানুষগুলি  ভীতুর ডিম হয়ে  দোদূল্যমানতার পথ (এদিকেও আছি, ওদিকেও আছি)  বেছে নেয়েছে,  কেননা পরা্ক্রম দুর্নীতিগ্রস্ত  সমাজে  অশুভ শক্তিকে  যমের মতোই ভয় পেতে সবাই বাধ্য ।   অশুভ এভাবে আমাদের সবাইকে সস্তায় দখলে নিয়েছে। আমজনতা/ করণিক/মানবাধিকার কর্মী/বুদ্ধিজীবী/শিক্ষক-শ্রমিক/ শিল্পী/জন-নেতা  কেউই ন্যায়ের পক্ষে সহজে কাজ করতে পারছে না। কারণ শুভ কাজে পথে পথে বাধা।  অশুভ-এর জন্য অবারিত প্রায় চ্যালেঞ্জহীন সুযোগ ও প্রতিপত্তি।  বড় অপরাধীরা উম্মোচিত হচ্ছে না, ধরাও পড়ছে না, কারণ তাদেরকে রক্ষায় তাদের পক্ষে  প্রবল  হয়ে আছে  স্বার্থেন্বেষী সহযোগী কুচক্রীরা;  অপরাধী যদি ব্যাবসায়ী কমিউনিটির লোক হয় তার জন্যে কমুনিটির নেতারা তার গ্রেফতারে বাধা দিবে বা দিতে চাইবে, বা ক্ষমা চাইবে। যদ

তথাকথিত প্রগতিশীল ধারার সিনেমায় 'ইসলাম' পরিবেশনা ও পুরষ্কারপ্রাপ্ত বাংলা সিনেমা 'টেলিভিশন' নিয়ে মন্তব্য -আইনুল বারী

তথাকথিত প্রগতিশীল ধারার   সিনেমায়   ' ইসলাম '  পরিবেশনা ও পুরষ্কারপ্রাপ্ত  বাংলা সিনেমা  ' টেলিভিশন '  নিয়ে সমালোচনা-মন্তব্য  (পুরোনো লেখা থেকে) -আইনুল বারী --              --------            --- সিনেমা-সাহিত্যে-চিত্রকর্মে পাশ্চাত্যের মূল্যায়নকে খুশি করে একটা ভালো আন্তর্জাতিক পুরষ্কার জুটিয়ে নিতে আধুনিক কালে , ( কেউ বলেন  উত্তরাধুনিক)  তৃতীয় বিশ্বের সৃষ্টিশীল আঁতেল সমাজের জ্ঞানচর্চার জনপ্রিয় দুটি প্রধান বিষয় টিকে আছে , একটি হলো পাঁজরের হাড় বেরোনো দারিদ্র্যকে শিল্পীর আঁচরে নিখুঁতভাবে তুলে ধরা ও নানা বাঁকে বিপ্লবকে চিনিয়ে দেয়া ; অন্যটি হলো বর্ণবাদ , সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় মৌলবাদ কীভাবে সমাজকে পেছনোর দিকে টেনে ধরছে তার নানা রকম ন্যারেটিভ তৈরি করা । প্রথম  বিষয়টি উপস্থাপনের দিক দিয়ে ও বাজারজাতকরণের জন্য এখন অনেকটা জীর্ণ  হয়ে গেছে , কিনতু  হালের ফ্যাসানের মতো চাঞ্চল্যকরভাবে এখন চলছে ধর্মীয় মৌলবাদ।  ধর্মীয় মৌলবাদ বলতে যেটা আসলে বোঝানো হয় সেটা এককভাবে ইসলামকেই দায়ী করে , অর্থাৎ ধর্মীয় মৌলবাদ বলতেই ইসলামি মৌলবাদ , তার সাথে ভদ্রভাবে একটু সন্ত্রাসবাদের প্রলেপ জুড়

বস্তুবাদী জ্ঞানতত্ত্বের সীমাবদ্ধতা- দার্শনিক আলাপন-১ -আইনুল বারী

বস্তুবাদী জ্ঞানতত্ত্বের সীমাবদ্ধতা- দার্শনিক আলাপন-১ - আইনুল বারী -- ---- --- গোঁড়া বস্তুবাদীরা অনেক ক্ষেত্রেই বোঝেন না   বস্তুকে নয় আমরা খুঁজি বাস্তবতাকে( reality);   হতে পারে বস্তু  হচ্ছে বাস্তবতার একটি প্রকাশ বা বিন্যাস মাত্র ,  কিন্তু বাস্তবতার কি তা সবটুকু ?  তাই জগত-বাস্তবতাকে অনুধাবনের  ক্ষেত্রে বস্তুবাদী নাস্তিকতা   এক ধরণের বর্ণান্ধতার জন্ম দিয়েছেন ,  তাই তা দার্শনিক চিন্তা-মননে  সেকেলে হয়ে পড়েছে। বাস্তবতা কী ?  অস্তিত্বশীল বাস্তবতা কেমন ? -  এসব দীর্ঘ একাডেমিক আলোচনা। শুধু দার্শনিক বার্কলির বিখ্যাত উচ্চারণটি এখানে স্মরণ করবো, ' esse est percipi' ( to be is to be perceived ).   প্রকৃত অর্থে   এই ধাধাঁর সমাধান করা আজো সম্ভব হয়নি। কিন্তু মুক্ত চিন্তা ও বিজ্ঞানের বিকাশ   আমাদের   রহস্যময় বিশ্বজগতের পেছনে এক ঐশ্বরিক সত্তার প্রয়োজনীয়তার অপরিহার্যতাকে মনে করিয়ে দেয় , যদিও অমনোযোগী,   যে  সাধারণ বস্তুবাদী চোখে ধরা পড়ে না।  বস্তুবাদীরা আত্মা ,  চেতনা ,  প্রাণ, আমি-কে ব্যাখ্যা করতে পারেন না ,   কেননা তারা সেগুলিকেও চূড়ান্ত  ' বস্তু '  হিসেবেই সঙ

হিমু তত্ত্ব ও হিমু দিবস -আইনুল বারী

হিমু তত্ত্ব ও হিমু দিবস (আমার পুরোনো লেখা থেকে) -আইনুল বারী ------------------------- খেয়ালি লেখক হুমায়ুন আহমেদ এ দেশের তরুণদের রোমাঞ্চকর আনন্দ দিতে হলুদ পাঞ্জাবির হিমু তত্ত্ব দিয়েছিলেন। হিমুকে ‘আধুনিক নাগরিক জীবনের এক দিকভ্রান্ত বৈরাগ্য’ বললে অত্যুক্তি হবে না। তার একটা শখের কাজ হলো নিজের মনের বিভ্রান্তিকে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে অস্বাভাবিক মজা পাওয়া। তার মধ্যে যেমন পরোপকারী একটা ভালোমানুষী আছে তেমনই কখনো কখনো তাকে দেখা যায় অন্যের প্রয়োজনের সময় আশ্চর্যরকম নির্বিকার থাকতে। তার আগ্রহের বিষ য় এন্টি-লজিক, এটা কী জিনিস তা সুস্পষ্ট নয়। হিমু তার নিজের জীবন সম্পর্কে, জীবন যাপনে ব্যক্তির দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে সুস্থির করে কিছু বলে না, অন্যের ব্যাপারেও তেমন কিছু বলে না। বারবার নানা ভঙ্গিতে পাঠককে মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে হিমু হিমালয়ের মতো মহাপুরুষ হতে চায়, যা তার বাবার স্বপ্ন ছিলো। হয়তো হিমু সম্পর্কে এর বাইরে আরো কিছু ব্যঞ্জনা থাকতে পারে। যা হোক, এ নিয়ে কিছু লিখতে বসার কারণ হচ্ছে, আমি কয়েকদিন থেকে একটি টিভির পর্দায় ‘হিমু দিবসের’ বিজ্ঞাপন দেখছি ! এই হিমু দিবসের গুরুত্ত্বটা আসলে কী? আমাদের সন্ত

ঘৃণা পরাজিত হোক, ভালোবাসা মুক্তি পাক -আইনুল বারী

ঘৃণা পরাজিত হোক , ভালোবাসা মুক্তি পাক -আইনুল বারী -- ------ --- --- ফেসবুকে নবীর নামে(তাঁর প্রতি শান্তি) কুটোক্তির জেরে রংপুরে বিশাল গন্ডোগোল , কয়েকজন নিহত-আহত হলো। পরিশেষে কুচক্রীরা কিছু নিরীহ হিন্দু পরিবারের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। দুঃখ লাগে বলতে হচ্ছে ' হিন্দুদের ঘর বাড়ি ' । সত্যি আজ আমরা ধর্মকে , মানবতাকে কোন অধঃপতনে যে নামিয়ে এনেছি। শয়তান কি এর চেয়ে বেশি কিছু চাইবে ? সোনালী স্মৃতির মতো আজ মনে হয় , এক সময় ছিলো এলাকার মাসি-পিসিরা আমাদের আত্মীয়ের মতো ছিলো , প্রিয় বন্ধু হিন্দু , তাই বেহেশতে যাবে না ভেবে কতো কষ্ট পেয়েছি। তারও হয়তো এমনই দুঃখ হতো মুসলমান বন্ধুর জন্যে। কতোই না উজার করা ভালোবাসা পেতাম পরষ্পর। নানী-দাদীদের কালে আরও অন্তরঙ্গতা ছিলো। ধীরে ধীরে আমরা উদার মানবিক বোধকে সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িকতার পর্যায়ে নামিয়ে এনে ছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে  শেখানো হয়েছে , বিদ্বেষে ভরা সাম্প্র দায়িকতা কে, ধর্মকে নয়। এই সাম্প্রদায়িকতা বাংলাদেশে ইসলাম আবির্ভাবের সুচনা পর্ব থেকে বিংশ শতকের প্রথম কয়েক দশক পর্যন্ত (অনু) ছিলো না। এরপর আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতদের মাঝে  বী